Header Ads

ad728
  • Breaking News

    আত্মহত্যা মহাপাপ, আত্মহত্যাকারী জাহান্নামী

    আত্মহত্যা করা ইসলামী শরী’আতে একটি জঘন্যতম পাপ যার একমাত্র শাস্তি হল জাহান্নাম। বিশ্ব নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আত্মহত্যাকারীর জানাযা ছালাত আদায় করেননি (দ্রঃ মুসলিম, জানাযা অধ্যায়,হা/১৬২৪): এ থেকে অনুমান করা যায় সে কত বড় পাপী। আত্মহত্যা ইহকাল পরকাল উভয়টি ধ্বংস করে দেয়। তা যে কোন কারণেই সংঘটিত হোকনা কেন। মহান আল্লাহ বলেনঃ আর  তোমরা আত্মহত্যা কর না, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়াশীল (সূরাহ নিসা/২৯ )।
    Ø  জুন্দুব বিন আব্দুল্লাহ নবী (ছাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেনঃ একজন  ব্যক্তি জখম হলে, সে (অধৈর্য হয়ে) আত্মহত্যা করে। এরই প্রেক্ষিতে আল্লাহ বললেনঃ আমার বান্দাহ আমার নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই নিজের জীবনের ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আমি তার উপর জান্নাত হারাম করে দিলাম (বুখারী, জানাযা অধ্যায়, হা/১২৭৫)।
    Ø  ছাবিত বিন যাহ্হাক (রাঃ) নবী (ছাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন লৌহ অস্ত্রাঘাতে আত্মহত্যা করবে, তাকে সে লৌহ অস্ত্র দিয়েই জাহান্নামে শাস্তি দেয়া হবে। (অর্থাৎ যেভাবে লৌহ অস্ত্র দিয়ে আত্মহত্যা করেছিল, ঠিক সেভাবে সে জাহান্নামে আত্মহত্যা করতে থাকবে) (বুখারী, জানাযা অধ্যায়, হা/১২৭৫)।
    Ø  আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ছাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি শ্বাসরোধ করে আত্মহত্যা করবে, সে জাহান্নামেও এভাবে আত্মহত্যা করবে। আর  যে ব্যক্তি অস্ত্রের আঘাতে আত্মহত্যা করবে সে জাহান্নামেও এভাবে আত্মহত্যা করতে থাকবে (বুখারী, জানাযা অধ্যায়, হা/১২৭৬)।
    Ø  আবু হোরায়রা (রাঃ) নবী (ছাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি পাহাড় থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করবে, সে জাহান্নামে অনুরুপভাবে (পহাড় থেকে লাফিয়ে পড়ে পড়ে) আত্মহত্যা করতেই থাকবে। এবং উহা হবে তার স্থায়ী বাসস্থান। যে ব্যক্তি বিষ পানে আত্মহত্যা করবে,তার বিষ তার হাতে থাকবে, জাহান্নামে সে সর্বক্ষণ বিষ পান করে আত্মহত্যা করতে থাকবে। আর উহা হবে তার স্থায়ী বাসস্থান। আর  যে ব্যক্তি লৌহাস্ত্র দিয়ে আত্মহত্যা করবে, সে লৌহাস্ত্রই তার হাতে থাকবে । জাহান্নামে সে তা নিজ পেটে ঢুকাতে থাকবে, আর সে খানে সে চিরস্থায়ীভাবে থাকবে (বুখারী, ডাক্তারী অধ্যায়, হা/৫৩৩৩, মুসলিম, ঈমান অধ্যায়, হা/১২৭৬)।
    Ø  ছাবেত বিন যাহহাক থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি যে বস্তু দ্বারা দুনিয়ায় আত্মহত্যা করবে, তাকে কিয়ামত দিবসে সে বস্তু দ্বারাই শাস্তি দেয়া হবে। যে ব্যক্তি কোন মুমিন ব্যক্তিকে অভিসম্পাত করল সে যেন তাকে হত্যা করে ফেলল, আর যে ব্যক্তি কোন মুমিন ব্যক্তিকে মিথ্যা অপবাদ দিল সেও যেন তাকে হত্যা করে ফেলল (বুখারী, আদব অধ্যায়, হা/৫৫৮৭, ৫৬৪০)।

    Ø   জাবের বিন সামুরাহ হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ নবী (ছাঃ) এর নিকট এমন এক  ব্যক্তিকে নিয়ে আসা হল, যে লোহার ফলা দ্বারা আত্মহত্যা করেছিল, ফলে তিনি তার ছালাতে জানাযা আদায় করেননি (মুসলিম,জানাযা অধ্যায়,হা/১৬২৪)।
    Ø  জাবের বিন সামুরাহ হতে বর্ণিত, জনৈক ব্যক্তি লৌহ ফলক দ্বারা আত্মহত্যা করলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেনঃ আমি কিন্তু তার জানাযা ছালাত আদায় করব না (নাসাঈ, জানাযা অধ্যায়, হা/১৯৩৮)।

    নবী (ছাঃ) এরশাদ করেছেনঃ নিশ্চয় ফাসেকরাই হল জাহান্নামের অধিবাসী। তাঁকে বলা হলঃ কারা সেই ফাসেক্ব? তিনি বললেনঃ মহিলারা। জনৈক ব্যক্তি বললঃ হে আল্লাহর রাসূল! তারা কি আমাদেরই মা, বোন, স্ত্রী নন? তিনি বললেনঃ হাঁ, অবশ্যই। তবে তাদেরকে কোন কিছু দান করা হলে তারা শুকরিয়া জ্ঞাপন করে না। আর যখন তারা বিপদাপদ দ্বারা আক্রান্ত হয় তখন ধৈর্য ধারণ করে না (সিলসিলাতুল আহাদীছ আছ্ ছহীহাহ, হা/৩০৫৮, মুখতাছার ছহীহাহ, হা/১৪৬১)।

    আর সমস্ত বিপর্যয়ের মূল কারণ এই দুটি বিষয়ইঃ অর্থাৎ সীমাহীন রাগ এবং ধৈর্যের অভাব। সীমাহীন রাগের কারণেই স্বামী রেগে গিয়ে স্ত্রীকে এক সাথে তিন তালাক্ব দেয়, স্ত্রীকে খুন করে, একে অপরকে খুন করে, স্ত্রী আত্মহত্যা করে।
    তদরূপ বিভিন্ন বিপদাপদে পড়ে ধৈর্য হারা হয়ে অনেকে আত্মহত্যার মত জঘণ্য পাপের পথ বেছে নেয়। মনে ভাবে এর মাধ্যমেই সে নিস্কৃতি পেয়ে গেল। অথচ এর মাধ্যমে তার দুনিয়া ও আখেরাত আরো বরবাদ হল।
    এই বড় পাপটি সংঘটিত হওয়ার পিছনে ইবলিস শয়তানের মুখ্য ভূমিকা থাকে, মানুষকে জাহান্নামের মুখে ঠেলে দেয়াই শয়তানের কাজ। সে জন্যই আল্লাহ কুরআনের একাধিক স্থানে এই ইবলিস থেকে সাবধান করেছেন।
    এরশাদ হচ্ছেঃ হে বানী আদম  আমি কি তোমাদের বিশেষভাবে বলে দিইনি যে, তোমরা শয়তানের ইবাদত করবেনা, কারণ সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু  (সূরা ইয়াসীন/৬০)।
     
       এই পাপটি বেশির ভাগ ঘটতে দেখা যায় বিধর্মীধের মাঝে। কারণ তারা মনে করে, এই দুনিয়াই তাদের প্রথম এবং শেষ, পরকালে তারা আদৌ বিশ্বাসী নয়। পরকালীন আযাব ও গযববের প্রতিও তাদের মোটেই ঈমান নেই। তারা ভাবে আত্মহত্যার মাধ্যমে তারা দুনিয়ার ঝামেলা ও প্রতিকুল অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়ে গেল। অথচ তারা এর মাধ্যমে নিজেকে আরো কঠিন শাস্তির দিকে ঠেলে দেয়, যদিও তারা কাফের হওয়ার জন্য অনুধাবন করতে পারেনা। অবশ্য কাফেরদের ক্ষেত্রে এমনটি হওয়া কোন বিচিত্র ব্যাপার নয়। কারণ, তারা হল অপরিণামদর্শী। তাদেরকে আল্লাহ “চতুস্পদ জন্তু তুল্য” বলে আক্ষা দিয়েছেন, বরং তাদেরকে ঐ সব চতুস্পদ জন্তুর চেয়েও নিকৃষ্ট বলেছেন (দ্রঃ আরাফ/১৭৯)।

    নবী (ছাঃ) বলেনঃ সবচেয়ে যাদের বিপদ আসে তাঁরা হলেনঃ নবী রাসূলগণ, অতঃপর সৎ ব্যক্তিগণ পর্যায় ক্রমে। মানুষ মুছীবতে আক্রান্ত হয় তারধার্মিকতা অনুসারে। সুতরাং যার ধর্মে দৃঢ়তা আছে তার বিপদও দৃঢ় হয়, পক্ষান্তরে যার ধার্মিকতা দুর্বল, তার বিপদও দূর্বল হয়। একজন ব্যক্তি বালা মুছীবতে আক্রান্ত হওয়ার কারণে এমন হয়ে যায় যে, সে মানুষের মাঝে বিচরণ করে অথচ তার কোন গুনাহ নেই (ইবনু হিব্বান, হাদীছ ছহীহ , ছহীহুল জামে১৭০৫)।

    আত্মহত্যার মত  এই  জঘণ্য পাপ থেকে নিজে বিরত থাকুন, অপরকেও বিরত রাখুন। আল্লাহ আমাদের সকলকে সমস্ত পাপ কাজ থেকে বিরত রেখে কুরআন ও ছহীহ হাদীছের পথে পরিচালিত করুন (আমীন)।

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728