Header Ads

ad728
  • Breaking News

    মিসওয়াকের ফজিলত


    ❏ হাদিস ১ : বর্ণনা ১-৫


    হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত এ হাদীসটি বিভিন্ন সনদে এসেছে।


    عَنْ عَائِشَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنَّهُ قَالَ: ” فَضْلُ الصَّلَاةِ بِالسِّوَاكِ، عَلَى الصَّلَاةِ بِغَيْرِ سِوَاكٍ، سَبْعِينَ ضِعْفًا “


    হযরত আয়শা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেছেনঃ মিসওয়াক করে নামায পড়ার ফযীলত মিসওয়াক বিহীন নামাযের তুলনায় ৭০ গুণ বেশি। 

    তথ্যসূত্রঃ

    ১.ছহীহ্ ইবনে খুজাইমা, হাদিস নং ১৩৭ 

    ২.মুস্তাদরাকে হাকেম, ১ম খন্ড, ২১৬ পৃ: হাদিস নং ৫১৫ 

    ৩.ইমাম বায়হাক্বী: শুয়াইবুল ঈমান, হাদিস নং ২৫১৯ 

    ৪.ইমাম বায়হাক্বী: সুনানে কুবরা, হাদিস নং ১৫৯ 

    ৫.ইমাম বায়হাকী: সুনানে ছাগীর, হাদিস নং ৮০ 

    ৬.মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদিস নং ৪৭৩৮ 

    ৭.ইমাম ইবনে শাহিন: আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব লিকাওয়াইমিস সুন্নাহ, হাদিস নং ১৫৬৭ 

    ৮.আল্লামা ইবনে মুলাক্কিন: বদরুল মুনীর, ২য় খন্ড, ১৪ পৃ: 

    ৯.ইমাম আইনী: উমদাতুল ক্বারী শরহে বুখারী, ৬ষ্ঠ খন্ড, ১৮২ পৃ: 

    ১০.ইমাম কাস্তালানী: এরশাদুস সারী শরহে বুখারী, ২য় খন্ড, ১৬৪ পৃ: 

    ১১.ইমাম হায়ছামী: মাজমুয়ায়ে জাওয়াইদ, হাদিস নং ১৬৭৯৬ 

    ১২.ইমাম মােল্লা আলী কারী: মেরকাত শরহে মেসকাত, হাদিস নং ৩৮৯ 

    ১৩.আল্লামা মানাভী: ফায়জুল কাদীর, হাদিস, নং ৫৮৫৭ সুবুলুস সালাম, ১ম খন্ড, ৫৭ পৃ: 

    ১৪.মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৬৩৪০, 

    ১৫.মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-১০৮, 

    ১৬.মেশকাত শরীফ-১/৪৫


    এই হাদিস সম্পর্কে ইমাম হাকেম (رحمة الله) ও ইমাম শামছুদ্দীন যাহাবী (رحمة الله) বলেছেন: 

    هذا حديث صحيح على شرط مسلم

    “ইমাম মুসলীম (رحمة الله) এর মতে এই হাদিস ছহীহ্।” (হাকেম, ১ম খন্ড, ২১৬ পৃঃ)। 


    ❏ বর্ণনা ২:


    এর আরেকটি সনদ রয়েছে, 

    -“আবু হিশাম রিফাই ইসহাক থেকে হাদিস বর্ণনা করেন, তিনি মুয়াবিয়া থেকে, তিনি যুহুরী থেকে, তিনি উরওয়া থেকে, তিনি হজরত আয়েশা (رضي الله عنه) থেকে..।” 

    (মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদিস নং ৪৭৩৮; মাকছুদুল আলী ফি জাওয়াইদে আবী ইয়ালা মুছেলী, হাদিস নং ১৬৩০)। 


    ❏ বর্ণনা ৩:


    ইমাম আবু বকর আহমদ ইবনে আলী বাগদাদী (رحمة الله) ওফাত ৪৬৩ হিজরী তদীয় কিতাবে উল্লেখ করেছেন, 

    হজরত আয়েশা (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে করিম (ﷺ) বলেছেন: মেসওয়াকের সহিত নামাজ পড়া মেসওয়াকহীন নামাজের চেয়ে ৭০ গুণ বেশী সওয়াব।” 

    (মুত্তাফাক ওয়াল মুফরাক, ২য় খন্ড, ৯৪৯ পৃ: ৫৭৬ নং হাদিস) 


    ❏ বর্ণনা ৪:


    এর আরেকটি সনদ রয়েছে, 

    -“হজরত আয়েশা (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে করিম (ﷺ) বলেছেন: মেসওয়াক সহ নামাজ পড়া মেসওয়াকহীন নামাজের চেয়ে ৭০ গুণ বেশী সওয়ার , (ইমাম ইবনে হিব্বান: মাজরুহিন, ৩য় খন্ড, ৩৩ পৃ:)। 


    ❏ বর্ণনা ৫:


    এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়াত রয়েছে, 

    -“হজরত আয়েশা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, মেসওয়াকসহ নামাজ মেসওয়াকহীন ৭০ রাকাত নামাজের চেয়ে আরাে উত্তম।” (ইমাম ছিয়তী: জামেউস ছাগীর, হাদিস নং ৭৯৫৮) 


    হাদিসের সনদমানঃ


    ☛এ হাদিস সম্পর্কে আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) বলেন, 

    -“এই হাদিসের সাক্ষ্য রয়েছে হজরত ইবনে আব্বাস ও জাবের (رضي الله عنه) এর বর্ণিত হাদিসের সাথে। ইমাম আবু নুয়াইম (رحمة الله) এই দুইটি হাদিস অতি উত্তম হাছান সনদে বর্ণনা করেছেন।” 

    (ইমাম মােল্লা আলী ক্বারী: মেরকাত, শরহে মেসকাত, ১৮৯ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়) 


    ☛হাদিসটি ইমাম জুহুরী (رحمة الله) থেকে আরেকটি সূত্রে বর্ণিত আছে, “এই হাদিস আবু নুয়াইম (رحمة الله) যুহুরী (رحمة الله) থেকে ইবনে উয়াইনা, মানছুর ও যুহুরী সূত্রে বর্ণনা করেছেন। (ইমাম আসকালানী: তালখিছুল হাবির, ১ম খন্ড, ২৪১ পৃঃ) 


    ☛ইমাম ছাখাবী (رحمة الله) আবু নুয়াইম (رحمة الله) এর সনদ সম্পর্কে বলেন, “আবু নুয়াইম হুমাইদী, সুফিয়ান, মানছুর ও যুহুরী সূত্রে ইহা বর্ণনা করেছেন। এর সকল বর্ণনাকারীগণ বিশ্বস্ত।” (ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানাহ, ১ম খন্ড, ৬২৬ পৃ: ৬২৫ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়) 


    ☛এ বিষয়ে ইমাম ছাখাবী (رحمة الله) ও ইমাম আজলুনী (رحمة الله) আরাে বক্তব্য লক্ষ্য করুন, -“এর সনদ অতি-উত্তম, হজরত আনাস (رضي الله عنه), জাবের (رضي الله عنه), ইবনে উমর (رضي الله عنه) থেকেও ইহা বর্ণিত আছে। অনুরূপ উম্মে দারদা (رضي الله عنه) ও যুবাইর ইবনে নাফির (رضي الله عنه) থেকে মুরছাল সূত্রে বর্ণনা করেছেন।” (ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানাহ, ১ম খন্ড, ৬২৬ পৃ: ৬২৫ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়; ইমাম আজলুনী: কাশফুল খাফা, ২য় খন্ড, ২৯ পৃঃ) 


    ❏ হাদিস ২ :


    ☛ইমাম মুনজেরী (رحمة الله) এভাবে রেওয়াতটি উল্লেখ করেছেন, 

    -“হজরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বলেন, নিশ্চয় আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেন: মেসওয়াকসহ দুই রাকাত নামাজ মেসওয়াকহীন ৭০ বা নামাজের চেয়ে আরাে উত্তম। ইমাম আবু নুয়াইম (رحمة الله) তার কিতা ছাওয়াক’ গ্রন্থে অতিউত্তম সনদে ইহা বর্ণনা করেছেন।” (ইমাম মুনজেরীঃ আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব, হাদিস নং ৩৩৫)। 


    একই অর্থের হাদীস বর্ণনা করা হয়েছে হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে।

    ﻓﻘﺪ ﺃﺧﺮﺟﻪُ ﺃَﺑُﻮ ﻧﻌﻴﻢ ﻋَﻦ ﻣُﺤَﻤَّﺪ ﺑﻦ ﺣﺒَﺎﻥ ، ﻋَﻦ ﺃﺑﻲ ﺑﻜﺮ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﻋَﺎﺻِﻢ ، ﻋَﻦ ﻣُﺤَﻤَّﺪ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺑﻜﺮ ﺍﻟْﻤﻘﺪﻣِﻲ ، ﻋَﻦ ﻳﺰِﻳﺪ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ، ﺛَﻨَﺎ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺍﻟْﺤَﻮْﺭَﺍﺀ ﺃﻧَّﻪ ﺳﻤﻊ ﺳﻌﻴﺪ ﺑﻦ ﺟُﺒَﻴﺮ ﻋَﻦ ﺍﺑْﻦ ﻋَﺒَّﺎﺱ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬﻤﺎ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻗَﺎﻝَ : ‏« ﻟِﺄَﻥ ﺃُﺻَﻠِّﻲ ‏( ﺭَﻛْﻌَﺘَﻴﻦ ‏) ﺑِﺴِﻮَﺍﻙٍ ﺃَﺣَﺐُّ ﺇَﻟَﻲَّ ﻣِﻦْ ﺃﻥْ ﺃُﺻَﻠِّﻲ ‏( ﺳَﺒْﻌِﻴﻦ ‏) ﺭَﻛْﻌَﺔ ﺑِﻐَﻴﺮِ ﺳِﻮَﺍﻙٍ »

    হযরত ইবনু আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, রাসুল (ﷺ) বলেছেন, মেসওয়াক বিহীন ৭০ রাকাত সালাত আদায় করা থেকে মেসওয়াক করে দু রাকাত সালাত আদায় করা আমার নিকট অধিক প্রিয়। (আবু নাঈম)


    ● ইমাম সাখাবী (رحمة الله) বলেন, ইবনু আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত এ হাদীসটির সনদ ভাল। অর্থাৎ হাদীসটি সহীহ। 


    ● ইমাম মুনযিরী (رحمة الله)ও একই কথা বলেছেন। (সনদ ভাল)

    [আত তারগীব ওয়াত তারহীব] 


    ● ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী (رحمة الله)ও এটাকে সমর্থন করেছেন।

    [আল মাকাসিদুল হাসানাহ-খন্ড ২/ ৪২৪ পৃ]


    সনদ পর্যালোচনাঃ


    ১) মুহাম্মাদ বিন হিব্বানঃ

    ● তিনি মশহুর ইমাম। নির্ভরযোগ্য।

    ২) আবু বাকর বিন আবী আসিমঃ 

    ● ইমাম আবু হাতিম রাযী (رحمة الله) বলেন, তিনি সত্যবাদী। 

    [আল জারহু ওয়াত তা’দীল-১২০]

    ৩) মুহাম্মাদ বিন আবী বাকর আল মুকাদ্দামীঃ

    ● ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য।

    [সিয়ারু আ’লামিন নুবালা আত তাবাকাতুস সানিয়্যাতা আশারাহ]

    ৪) ইয়াযিদ বিন আব্দিল্লাহঃ

    ● ইমাম ইবনু হিব্বান বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য। [কিতাবুস সিকাত-১৬৪০৫]

    ৫) আব্দুল্লাহ বিন আবিল হাওরাঃ 

    ● উনি মূলত আব্দুল্লাহ বিন আবিল জাওযা। ইমাম ইবনু হিব্বান বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য। [কিতাবুস সিকাত-৯৩৯২]


    ❏ হাদিস ৩:


    এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়াত রয়েছে, 

    -“মেসওয়াক সহ নামাজ পড়া মেসওয়াকহীন নামাজের চেয়ে ৭০ গুণ বেশী সওয়াব। ইবনে নাজ্জার তার তারিখে বাগদাদে হজরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেছেন।” 

    (ইমাম ছিয়তী: জামেউস ছাগীর, হাদিস নং ৬৮৭২; ইমাম ছিয়তী: জামেউল আহাদিস, হাদিস নং ১২৭৭২) 


    এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়াত রয়েছে, 

    -“হজরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) নবী করিম (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন: মেসওয়াকের সহিত নামাজ পড়া মেসওয়াকহীন নামাজের চেয়ে ৭৫ গুণ বেশী সওয়াব।” (ইমাম ইবনে আদী: আল কামিল ফিদ দোয়াফাই রিজাল, ৮ম খন্ড, ১৭ পৃ:)। 


    ❏ হাদিস ৪ :


    হযরত জাবির (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, 'মিসওয়াক আদায় করার পর ২ রাকাআত আদায় করা মিসওয়াক বিহীন ৭০ রাকা'আত নামাজ আদায় করা চেয়েও বেশি মর্যাদাপূর্ণ।' 

    [আল-তারগীব ওয়া আত- তারহিব, খন্ড  ১, পৃষ্ঠা ১০২, হাদিস ১৮, কাশফুল খাফা-১/৪৯৭]


    ইমাম আজুলুনী (রহঃ) উক্ত হাদীসের ব্যাপারে মন্তব্য করেনঃ


    ورواه الحميدي وأبو نعيم عن جابر وإسناده حسن،


    এ মর্মের হাদীস ইমাম হুমাইদী এবং আবু নূআইম হযরত জাবির (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেছেন। যার সনদ হাসান। [কাশফুল খাফা-১/৪৯৭, বর্ণনা নং-১৩৯৯]


    ❏ হাদিস ৫:


    ইমাম আসলাম ইবনে সাহল ইবনে আসলাম ওয়াছেতী (رحمة الله) ওফাত ২৯২ হিজরী তদীয় কিতাবে উল্লেখ করেন, 

    -“ইবনে উমর (رضي الله عنه) এর গােলাম তাবেঈ হযরত নাফে (رحمة الله) বলেন, রাসূলে পাক (ﷺ) বলেছেন: মেসওয়াক সহ নামাজ পড়া মেসওয়াকহীন নামাজের চেয়ে ৭০ গুণ বেশী সওয়াব।” (তারিখে আওছাত, ১ম খন্ড, ২৩৪ পৃ:) 


    ❏ হাদিস ৬:


    এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়াত রয়েছে, “হজরত উম্মে দারদা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, মেসওয়াক সহ নামাজ পড়া মেসওয়াকহীন নামাজের চেয়ে ৭০ গুণ বেশী সওয়াব। দারে কুতনী তার ইফরাদ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন।” 

    (ইমাম ছিয়তী: জামেউস ছাগীর, হাদিস নং ৬৮৭৩; ইমাম ছিয়তী: জামেউল আহাদিস, হাদিস নং ১৭২৭৩)। 


    হাদিসের সনদমানঃ


    এই হাদিস সম্পর্কে আল্লামা মানাভী (رحمة الله) বলেন, -“এর সনদ হাছান।” 

    (আল্লামা মানাবী: আত তাইছির বি’শরহে জামেইস ছাগীর, ২য় খন্ড, ৩৫ পৃ:)। 


    ☛এ সম্পর্কে ইমাম মানাভী (رحمة الله) আরাে বলেন, 

    ☛“ইমাম হায়ছামী (رحمة الله) বলেন, এর সকল বর্ণনাকারী বিশ্বস্ত। ইমাম হুমাইদী ও আবু নুয়াইম (رحمة الله) জাবের (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেছেন। 

    ☛ইমাম মুনজেরী (رحمة الله) বলেছেন: এর সনদ হাছান। 

    ☛ইমাম ছামহুদী (رحمة الله) বলেছেন: এর সকল রাবীগণ বিশ্বস্ত।” (আল্লামা মানাভী: ফায়জুল কাদীর, হাদিস নং ৪৪৬৬) 

    ☛এই রেওয়াত সম্পর্কে আল্লামা মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল ইবনে ছিলাহ ছানআনী (رحمة الله) ওফাত ১১৮২ হিজরী তদীয় কিতাবে বলেন,

    -“ইমাম হায়ছামী বলেন: এর বর্ণনাকারী সকলেই বিশ্বস্ত।” (আত তানভীর শরহে জামেউছ ছাগীর, হাদিস নং ৪৪৫০ এর ব্যাখ্যায়) 


    ❏ হাদিস ৭:


    এ বিষয়ে আরেকটি সনদসহ রেওয়াত উল্লেখ করা যায়, -“হাছান ইবনে আত্বিয়া (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে করিম (ﷺ) বলেছেন: মেসওয়াকসহ দুই রাকাত নামাজ মেসওয়াকহীন ৭০ রাকাত নামাজের চেয়ে আরাে উত্তম।” (ইমাম ইবনে শাহিন: আত্তারগীব ফি ফাদ্বাইলিল আমাল ওয়াছ ছাওয়াব, হাদিস নং ৫১০) 



    মিসওয়াকের অন্যান্য ফজিলতঃ



    ⭕ মৃত্যুর পূর্বে কালিমা নসীবঃ

    ════════════════

    ◾আল্লামা ইবনে আবেদীন (রহ.) বলেন, ‘মিসওয়াকের সত্তরটির অধিক উপকারিতা রয়েছে। যার সর্বোচ্চ হলো মৃত্যুর সময় কালেমা নসিব হওয়া, আর সর্বনিম্নটি হলো মুখের দুর্গন্ধ দূর করা।’(সুবহানআল্লাহ) 

    (ফাতাওয়া শামি)।


    ⭕ অন্যান্য ফজিলতঃ

    ════════════

    ◾রাসুলুল্লাহ (ﷺ.) ইরশাদ করেন,"যদি আমি আমার উম্মতের ওপর কষ্ট হওয়ার আশঙ্কা না করতাম, তাহলে তাদের প্রত্যেক নামাজেরসময় মিসওয়াক করার আদেশ দিতাম।’ (বুখারি : ৮৮৭)।


    ◾রাসুলুল্লাহ (ﷺ.) ইরশাদ করেন, ‘এমনটি কখনও হয়নি, জিবরাইল (আ.) আমার কাছে এসেছেন আর আমাকে মিসওয়াকের আদেশ করেননি।(মুসনাদে আহমদ : ২২২৬৯)।

    ◾‘মিসওয়াক মুখের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মাধ্যম ও আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উপায়।’ (নাসায়ি : ৫)।


    এই আমল দ্বারা সওয়াব কতটুকু হতে পারে সেই বিষয়ে Calculation করে নেই।


    ⭕ যারা আপনার আহবান অনুযায়ী আমল করবেন তাদের সওয়াবঃ

    ══════════════════

    "যে ব্যক্তি কল্যাণ ও সৎকাজের সুপারিশ করবে, সে তা থেকে অংশ পাবে।(সুবহানআল্লাহ)

    (সুরা নিসা : ৮৫)


    ⭕ 10 - 700 গুণ সওয়াবঃ

    ══════════════════

    রাসুল (ﷺ) বলেন ‘আল্লাহ তাআলা বলেন, আদম সন্তানের প্রত্যেক আমল তার নিজের জন্য; তাতে তার সওয়াব ১০ থেকে ৭০০ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু রোযা নয়। রোযা হল আমার জন্য। আর আমি নিজে তার প্রতিদান দেব।’’ (সুবহানআল্লাহ)

    (বুখারী ও মুসলিম)


    ⭕ জামাআতে নামাজ আদায় করলে ২৭ গুণ সওয়াবঃ

    ══════════════════

    রাসুল (ﷺ.) বলেন, ‘জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায়কারী একাকী নামাজ পড়া অপেক্ষা ২৭ গুণ বেশি মর্যাদার অধিকারী।’(সুবহানআল্লাহ)

    (বুখারি, হাদিস নং: ৬৪৫, মুসলিম, হাদিসে নং: ৬৫০)


    ⭕ Calculation :

    ══════════

    গভীর ভাবে হিসাব করলে দেখা যায় ৫ ওয়াক্ত নামাজ মিসওয়াক ব্যবহার করে জামাতের সাথে আদায় করলে ইনশাআল্লাহ প্রতি রাকাতের বিনিময়ে নিম্নলিখিত সওয়াব অর্জন করা যায়।


    📌 মিসওয়াক করে সালাত আদায়ে ৭০ গুণ সওয়াব ❌ ৭০০ গুন সওয়াব ❌ জামাতে ২৭ গুণ সওয়াব = ১,৩২৩,০০০ অর্থাৎ প্রতি রাকাতের বিনিময়ে ইনশাআল্লাহ ১৩ লক্ষ ২৩ হাজার রাকাতের সওয়াব পেতে পারেন মাত্র ৪-৫মিনিটের আমলের মাধ্যমে।(সুবহানআল্লাহ)


    📌 মনে করুন আপনি ১০জনকে বলে এই আমল করাতে সক্ষম হয়েছেন প্রত্যেকের সওয়াব থেকে আপনে সেই সওয়াবের ভাগীদার হবেন। মানে (১,৩২৩,০০০ ❌ ১০ = ১৩) কোটি রাকাতের সওয়াব। (সুবহানআল্লাহ)


    অথচ ভেবে দেখুন না জেনে কিংবা অলসতা করে নিজেও এই সওয়াব থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। অন্যকে না জানিয়ে তাদেরও বঞ্চিত করছি।

    সেজন্যই দেখবেন ১০০জন মুসল্লির মধ্যে ১জনও মেসওয়াক করে কিনা সন্দেহ। আমরা কি পারি ১০-২০টাকা দিয়ে মিসওয়াক কিনে নিজে ব্যবহার করতে আর পরিবার-পরিজন ও বন্ধু-বান্ধবকে এটা গিফট করে মিসওয়াক ব্যবহারে উদ্ভুদ্ধ করতে? জেনে রাখুনঃ-


    বিলুপ্ত সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরলে ১০০ শহীদের সওয়াবঃ

    ══════════════════ 

    হযরত আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন : “আমার উম্মাতের বিপর্যয়ের সময় যে আমার ছুন্নাতকে আঁকড়ে থাকবে তার জন্য একশত শহীদের সওয়াব।” – (বায়হাকী)


    মিসওয়াকের ২৫টি বরকতঃ-


    হযরত আল্লামা সায়্যিদ আহমদ তাহতাবী হানাফী

    (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) "হাশিয়াতুত তাহতাবী"

    তে মিসওয়াকের ২৫টি উপকারিতা ও ফযীলত

    এভাবে উদ্ধৃত করেন :

    ১/ মিসওয়াক শরীফকে আবশ্যক করে নাও, এর থেকে

    উদাসীন হয়ো না। তা সর্বদা করতে থাকো, কেননা

    এতে আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্ঠি নিহিত রয়েছে।

    ২/ সর্বদা মিসওয়াক করতে থাকলে রোজগারে

    সহজতা এবং বরকত হয়ে থাকে।

    ৩/ মাথা ব্যাথা দূর হয়ে যায়।

    ৪/ কফ দূর করে।

    ৫/ দৃষ্টি শক্তি প্রখর করে।

    ৬/ পাকস্থলী ঠিক থাকে।

    ৭/ শরীরে শক্তি যোগায়।

    ৮/ স্বরণশক্তি প্রখর করে এবং জ্ঞান বৃদ্ধি করে।

    ৯/ অন্তরকে পরিচ্ছন্ন করে।

    ১০/ নেকী বৃদ্ধি পায়।

    ১১/ ফিরিশতারা খুশি হয়।

    ১২/ মিসওয়াক শয়তানকে অসন্তুষ্ট করে দেয়।

    ১৩/ খাবারকে হজম (পরিপাক) করে।

    ১৪/ সন্তান জন্মদান সহজ হয়।

    ১৫/ বার্ধক্য দেরীতে আসে।

    ১৬/ পেটকে শক্তিশালী করে।

    ১৭/ শরীরে আল্লাহ তা'আলার আনুগত্যের জন্য

    শক্তি জোগায়।

    ১৮/ মৃত্যু যন্ত্রণা সহজ এবং কালেমা শাহাদাত

    নসীব হবে ।

    ১৯/ কিয়ামতে আমলনামা ডান হাতে আসবে।

    ২০/ পুলসিরাত বিদ্যুতের ন্যায় দ্রুত গতিতে পার

    হওয়ার সৌভাগ্য নসীব হবে ।

    ২১/ চাহিদা পুরণে তাকে সাহায্য করে।

    ২২/ কবরে শান্তি ও আরাম অনুভুত হবে।

    ২৩/ তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া হবে।

    ২৪/ দুনিয়া থেকে পাক পবিত্র হয়ে বিদায় নেবে।

    ২৫/ সবচেয়ে বড় উপকারিতা হলো, এতে আল্লাহ

    তা'আলা সন্তুষ্টি রয়েছে।


    (হাশিয়াতুত তাহতাবী আলা মারাকিউল ফালাহ, পৃষ্ঠা-৬৮, ৬৯)।


    আল্লাহ পাক আমাদেরকে আমল করার ও অন্যকে জানানোর তৌফিক দান করুন।  জারি থাকুক আপনার এই সওয়াবের সিলসিলা। (আমিন)

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728